এনএসআই, ডিজিএফআই দিয়ে এডিকে তুলে নেয়ার হুমকি

ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব:আনসার দিয়ে বরিশাল বিআরটিএর সহকারী পরিচালককে হেনস্তা পরিচালকের

Passenger Voice    |    ০১:৫৯ পিএম, ২০২২-১২-০৮


ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব:আনসার দিয়ে বরিশাল বিআরটিএর সহকারী পরিচালককে হেনস্তা পরিচালকের

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিত ভাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর বরিশাল সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলমকে আনসার সদস্য দিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে বিআরটিএর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (ইঞ্জিঃ) জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।  গতকাল ০৮ ডিসেম্বর সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) এর কার্যালয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্যাসেঞ্জার ভয়েস এর সূত্রে জানা যায়। এই ঘটনার একটি ভিডিও চিত্রও প্যাসেঞ্জার ভয়েসের হাতে এসেছে।

প্যাসেঞ্জার ভয়েসের হাতে আসা এক ভিডিওতে দেখা যায় আনসার সদস্য হুমায়ন কবির সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলমকে বলতে শুনা যাচ্ছে এইটা আপনার কোন অফিস না, আপনার বাবার অফিস না, তখন শাহ আলমকে আরো বলেন আপনাকে র‌্যাবে ধরে নিয়ে যাবে, এখান থেকে বের হলে এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা) , ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স) তুলে নিয়ে যাবে। এরপর শাহ আলমকে  WHO ARE YOU বলে হাতে আঙ্গুল উঠিয়ে তেড়ে যান আনসার সদস্য হুমায়ন কবির। এর পর আনসার সদস্য আরো বলেন এইটা ডাইরেক্টর স্যারের অর্ডার, অর্ডার বাই সাপ্লাই। 

সূত্র বলছে, এই সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলম বিআরটিএর খুলনা সার্কেলে কর্মরত থাকা সময়ে খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (ইঞ্জিঃ) জিয়াউর রহমান। বিআরটিএর আইনে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) ও উপ-পরিচালক (ইঞ্জিঃ) এর কাজের বিষয়ে স্পষ্ট বর্ননা থাকলেও বিভিন্ন কাজে দুইজনের মতের অমিল ছিল। এক পর্যায়ে এই দুই কর্মকর্তা ব্যক্তিগত রেশারেশি শুরু করেন। সিনিয়র কর্মকর্তা হওয়ায় জিয়াউর রহমান বিভিন্ন ভাবে শাহ আলমকে ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা করতেন বিষয়টি বিআরটিএর প্রশাসন বিভাগ অবগত হয়ে দুইজনকে খুলনা থেকে সরিয়ে নিয়ে ডিপার্টমেন্ট এর সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করেন।

দীর্ঘ সময় বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক (ইঞ্জিঃ) এর দায়িত্ব পালন করে সাম্প্রতিক বিভাগীয় পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন জিয়াউর রহমান। ২০২১ সালে জনপ্রশাসন পদকও পেয়েছেন তিনি। তবে ২০২১ সালের এক আদেশে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলমকে বরিশাল জেলা সার্কেলে বদলী করে কর্তৃপক্ষ। 

শাহ আলম বরিশাল সার্কেলে বদলী হওয়ার পর থেকে পরিচালক (ইঞ্জিঃ) নানান ভাবে এই কর্মকর্তাকে হেনস্তা ও অপদস্ত করার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন মিটিং এ শাহ আলমকে টার্গেট করে বিভিন্ন ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন এই পরিচালক এমনটা তথ্যও পাওয়া গেছে বরিশাল বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে।

বিআরটিএর প্রশাসন শাখার এক সূত্র বলছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিআরটিএ সদর কার্যালয় ০৫ জন আনসার সদস্যের বেতন ভাতাদি বাবদ বার্ষিক ৯ লক্ষ টাকা বাজেট প্রদান করেন বিআরটিএর বরিশাল সার্কেলকে। এদিকে ৩ জন সাধারণ আনসার সদস্য ও ১ জন পিসি নিয়মিত বিআরটিএর এই কার্যালয়ে ডিউটি পালন করছে । তবে তারা কিভাবে এখানে দায়িত্ব পালন করছে সেই বিষয়ে অবগত নয় বিআরটিএর এই সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলম। শুধু তাই নয় দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যগণ এই সার্কেল থেকে বেতন ভাতাদি গ্রহণ করেন না, এবং তাদের বেতন ভাতা বিআরটিএর কোন দপ্তর থেকে দিচ্ছে তাও জানেন না তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে বিআরটিএর বরিশাল সার্কেলে পূর্বে কর্মরত আচরণ সন্তোষজনক ছিলনা এমন আনসার সদস্যকে আবারও এই সার্কেল অফিসে জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের এক আদেশে বদলী করা হলে তা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলম বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বরিশাল জেলা কমান্ড্যান্ট কে পত্র প্রেরণ করেন।  বিষয়টি স্বাভাবিক হলেও পূর্বের শত্রুতার জের ধরে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শাহ আলম এর বিরুদ্ধে আনসার সদস্যদের উষ্কানি প্রদান করেন। আনসার সদস্যদের নিয়োগ, যোগদান ও তাদের দালালি ও গ্রাহক হয়রানীর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপাত্তসহ গত ১৩ অক্টোবর বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারকে পত্র প্রেরণ করেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ)। 

উক্ত পত্রে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) লিখেছেন বিআরটিএ বরিশাল সার্কেলে পদায়নকৃত একজন আনসার সদস্যকে পরিচালকের ডিউটি করান। এইসব বিষয়ে পরিচালক জিয়াউর রহমান আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আনসারদের উষ্কানি দিতেন বলে বিআরটিএর বরিশাল সার্কেলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অবগত ছিলেন। 

এই বিষয়ে বিআরটিএর পরিচালক (প্রশাসন) আজিজুর রহমান প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি, চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টি তদন্তের জন্য বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিঃ) সিরাজুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুর রাজ্জাককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর বিষয়টি তদন্তে বরিশাল যাবেন তারা। 

বরিশাল জেলা ্আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট বাসুদেব ঘোষ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে উর্ধতন ‍কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া মিডিয়ায় কথা বলতে পারি না।